নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 140 বার পঠিত
মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে জেলার মার্কেটগুলো নতুন সাজে সজ্জিত হয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের পছন্দের পোশাক সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন। ক্রেতারাও ভিড় করছেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।
সম্প্রতি বগুড়ার জলেশ্বরীতলা এলাকার বিভিন্ন শোরুম, সাতমাথার নিউমার্কেট, নওয়াববাড়ি সড়কের রানার প্লাজা, পুলিশ প্লাজা ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রতিটি মার্কেট, শোরুমগুলো রঙিন ঝাড়বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। সন্ধ্যার পরপরই শহরের নওয়াববাড়ি, জলেশ্বরীতলা এলাকার সড়কগুলো লাল, নীল, সবুজ আলোয় রঙিন হয়ে উঠছে।
দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, গরমের কারণে সুতি শাড়ির প্রাধান্যই বেশি। শাড়ির জমিনে হাতের কাজ, মেশিনের কাজ, স্ক্রিন বা ব্লক প্রিন্ট এবং হ্যান্ড পেইন্টের মাধ্যমে ফুলপাতা আর জ্যামিতিক নকশা।
এছাড়াও দেশি তাঁতে বোনা শাড়ি, জামদানি প্রিন্টের হাফ সিল্ক শাড়ি, সুতি শাড়ির প্রাধান্য থাকবে বলে জানান বিক্রেতারা। হালকা সবুজ, আকাশি, ঘিয়ে, ধূসর, হালকা গোলাপি রং দেখা যাচ্ছে বেশি। এক হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে হাফ সিল্ক ও তাঁতের শাড়ি। সিল্ক, মসলিন বা জর্জেটের শাড়িতে এমব্রয়ডারি, কাটওয়ার্ক, পুঁতি ও জরির কাজ করা শাড়িগুলো দেড় হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তরুণীদের জন্য দিল্লী বুটিকস, পাকিস্তানি থ্রি পিস, জর্জেটের পার্টি ড্রেস, ছোট সোনামনিদের জন্য পোশাকের দাম আছে ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ছেলেদের জন্য বিভিন্ন নকশা করা পাঞ্জাবি এনেছেন ব্যবসায়ীরা। এক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে।
শহরের রানার প্লাজার ছোটদের পোশাকের দোকান ইচ্ছা’র পরিচালক ডলার বলেন, এবার পার্টি ড্রেসের ট্রেন্ড চলছে বেশি। মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে হিরামান্ডি পোশাকই ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ। ঈদকে ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি শেষ। আশা করছি এবারের ঈদের ব্যবসা লাভজনক হবে।
বগুড়ার জলেশ্বরীতলা এলাকায় বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডসহ কয়েকশ শোরুম অবস্থিত। এসবের মধ্যে দরজিবাড়ি, রঙ বাংলাদেশ, দেশাল, নগরদোলা, আর্টিসান, রিচম্যান, ইজি এবং সারা ক্রেতাদের কাছে বেশি সমাদৃত। জলেশ্বরীতলা এলাকায় ক্রেতাদের অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি স্থানে রাস্তা একমুখি করা হয়েছে। এসব পয়েন্টে পুলিশ ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ থেকে নিরাপত্তা কর্মী দেয়া হয়েছে।
রঙ বাংলাদেশের বিক্রয় প্রতিনিধি রিয়া জানান, প্রতিবারের মত এবারও রঙ বাংলাদেশ দেশীয় সংস্কৃতির মিশেলে ঈদের পোশাকের আয়োজন করেছে। ঈদকে ঘিরে ক্রেতাদের কাছে সাড়া পাচ্ছি আমরা। এখনও ঈদের বাজার সেভাবে জমে না উঠলেও প্রতিদিনই ক্রেতারা আসছেন।
গরমের কারণে সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন জলেশ্বরীতলা এলাকায় আর্টিসান শোরুমের বিক্রয় প্রতিনিধি আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের পোশাকের আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। গরমের সময় বিবেচনা করে সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাফ সিল্কের আকর্ষণীয় পোশাক আছে এখানে। এ ছাড়া শিশু ও টিএনএজারদের জন্যও পার্টি ড্রেস আছে।
ঈদের কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে মানুষের ভিড় ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বগুড়া জেলা পুলিশ শহরের বাইরে ও ভিতরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। মহাসড়কের বগুড়া অংশে ডাকাতি প্রতিরোধ ও যানজট নিরসনসহ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলার ৩টি (শেরপুর, আদমদিঘী ও মোকামতলা) প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
রমজানে শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণই নয়, একই সঙ্গে রেল স্টেশন, বাস টার্মিনালে ও যানবাহনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা, ঈদ জামায়াতের নিরাপত্তা ও জাল টাকার অপব্যবহার রোধ এবং চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বাসসকে বলেন, শপিংমলগুলোর সামনে অবৈধভাবে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না এবং সেখানে কোনো গাড়ি দাঁড়াতে বা অবস্থান করতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জনসাধারণের কেনাকাটার সুবিধার্থে গভীর রাত পর্যন্ত পর্যাপ্ত নৈশ টহলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বড় অংকের অর্থ পরিবহনের ক্ষেত্রে পুলিশের সহায়তা নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
Posted ২:৩৬ পিএম | বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।